Create successful ePaper yourself
Turn your PDF publications into a flip-book with our unique Google optimized e-Paper software.
Sharodiya Durga Puja 2022
শারদীয়া দুর্গোৎসব ১৪২৯
দেখা হয় নাই চক্ু মেলিয়া ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া...
পুরুললয়া (রোবনী চক্রবর্্তী)
আমরা অনেকেই দেশে বিদেশে বহু জায়গা ঘুরে বেরোোনোোর পর হঠাৎ উদ্ার করি ঘরের কাছে একটা দারুণ জায়গা ছিল কিন্তু দেখা হতয়
ওঠেনি। এই বছরের ফেব্রুয়ারীতে আমার অবস্াটা হতয়চেি ঠিক সেই রকম। কাশ্ীর থেকে েণ্যােু মারী-বছরে একবার দেশের কোোনোো এক
জায়গায় ১-৩ সপ্াহ ঘুরে আসাটা অভ্্যাে হতয় গগতয়চেি প্রায়। বাদ সাধল অতিমারী। পশ্চিম িতগের একটু ফাঁকা জায়গা খু ঁজে বেড়াতনার
সেই হল শুরু। এমন কোোথাও যা গাচড় ঠনতয় যাওয়া যাবে। ফেব্রুয়াঠরতে এই ভ্াবেই পৌৌছে গেলাম কোোলকাতার অনতিদূরের পুরুলিয়াতে।
শীতের এক সকালে রওনা দিলাম আরণ্যকের দেশের উতদেতে্য।
মাঝে দুবার ব্রেক ঠেতয় আমরা পুরুলিয়া ঢু কলাম দুপুর ১ টা নাগাদ। আমাদের থাকার জায়গা ছিল শহরের ২০-২২ কিমি আগে ফু শ্টয়ারী
ড্্যাতের আগে একটা নতু ন তৈরী হওয়া ঠরেতটটে । জলের খুব কাছে চাষের জমির লাতগায়া এই জায়গাতে ঠরেটটে গুলি সবই অপেক্ােৃ ত নতু ন।
পুরুলিয়া বাঙালির কাছে রোে্য ছিল বহুদিন, ফলে চাহিদা ছিলনা তেমন। তার উপর আজও একটু গরম পরলে আর লোোক যায়না। ছোোট
ছোোট একচালা অনেকগুলোো বাংলোো ঠনতয় তৈরী আমাদের রিসর্্ টটিতে আমরা যেদিন ঢু কলাম সেই দিন দুপুরে এক দল শ্টঠভ্র শু্যশ্টং
করতে আসা লোোক সেই যে চলে গেল তারপর আর কেউ এল না। শুনলাম এই নাকি দস্তুর। আমরা সপ্াতহর শুরুতে গগতয়চেিাম। লোোক
আবার আসবে সপ্াহাততে। খাবার আতয়াজন বেশ ভ্ালোো। ফ্রেশ হতয় খাওয়া সেরে একটু বিশ্াে। ফেব্রুয়ারী হলে কি হবে, পুরুলিয়ার
সূযটে বোোঝাতে শুরু করেছে তার তেজ কত। তিনি একটু পশ্চিমে ঢলতে আমরা গাচড় ঠনতয় দিঠরতয় পরলাম কাছাকাছি জায়গা দেখতে।
ফু শ্টয়ারীর জলােয়শ্ট তৈরী হতয়তে এক নাম না জানা ছোোট নদীর জল বেধে। অপেক্ােৃ ত ছোোট হলেও এশ্ট বিখ্যাে হরেক রকমের পাখির
জন্য। সরু কিন্তু গাচড় যাবার মত রাস্া চলে গগতয়তে জলােতয়র উপর ঠেতয় পাশের সাঁওতাল গ্রামটিতে। সেখানে মেঠোো রাস্া আর পাকা
রাস্ার এক মেল বন্ধন। সেই ভ্াঙাচোোড়া পথ দপঠরতয় বড় রাস্তায় পৌৌছলে দূরে পাহাড় দেখা যায়। কাছের তিনশ্ট পাহাতড়র নামঃ তিলাবনি,
শ্েন্ুরপুর আর পন্জঠনয়া। গ্াতের বাচড়গুলোো খুব সুন্র করে সাজানোো। আল্পনা দেওয়া বাইরের দেওয়ালে। মেঠোো রাস্তায় অবাধে িতড়
বেড়াতছে হাঁস মূগটেী ছাগল। পড়তে বিকেলে লোোকজন ফিরছে মাঠ থেকে। তাদের অনেকের সাথে রতয়তে গোোরু মহিষের দল। পাহাতড়র
পিছনে সূযটে ঢলছে, শেষ হতছে দিন। তিলাবনীর উপরে উঠলাম – অনেক দূর অবধি দেখা যায়। তারপর ফিরে এলাম বাংলোোতে। রাত্রের
খাবার সেরে যখন একটু হাঁটছি দূর থেকে দভ্তে আসছে মাদোোলের শব্দ। শুনলাম সরস্বতী পূজোোর অনুষ্ান চলছে। এখানে সরস্বতী পূজোো
চলে এক মাস ধরে।
পরদিন সাত সকালে দিঠরতয় পরলাম বাগমুচডির উতদেতে্য। প্েে দাঁড়াতনা েয়ূর পাহাতড়। পাহাতড়র মাথায় িতড় দেখি এক বৃদ্ সাঁওতাল
এক জায়গায় বসে গান গাইছেন। নামার েেয় অতধটেে রাস্া তিনিও এলেন। এসে বসে বাবা মা কে গান শোোনালেন। জগেি আর পাহাতড়র
ঘেরাটোোপে সেই গান আর তার সুপ্ািীন বাে্যযত্্রের সুর- যেন দভ্তে আসছে আরণ্যকের পাতা থেকে। ভ্ানুমতি এসে দাঁড়াতি এক্ু শ্ণ সামনে।
পােেচডি দিতয় গাচড় এগগতয় চলে এক পাহাড় থেকে আর এক পাহাতড়। গতেি্য এবার মুরুগামা ড্্যাে। কংসাবতীর এক উপনদী সহরাঝোোর।
তার জল বেঁধে তৈরী এই জলােয় দুশ্ট- আপার আর দিায়ার ড্্যাে। ঝকঝকে আকাশের প্ঠেেিন জলে- নীল সে জল। পাহাতড়র মাথা
থেকে দেখা যায় বহুদূর। সেই নীচে যেখানে এই জলে হতছে চাষ, দেখা যাতছে সারি সারি গাছ আর দূরে পাহাতড়র রেখা। এই খানেই খাওয়া
হল সাথে ঠনতয় আসা দুপুরের খাবার। তারপর যারো মাতিটেি পাহাড় আর বামনি ফল্স। মাতিটেি পাহাড় এখন জি বাংলার েি্যাতণ সবার ঘরে
ঘরে। জনপ্রিয় শ্েঠরয়াল পিলুতে নাকি অনেকটা দেখানোো হতয়তে এই জায়গাটা। অল্প একটু উৎরাই ভ্াঙলে পাহাড় ঘেরা ছোোট জলােয়।
বামনি ফল্স অন্য রকম। সেখানে শ্েঁচড় দভ্তঙ নামতে হয় বেশ নীচে। নামার েেয় একপাশে চোোখে পরে মুরুগামার জল। েণটোর কাছ অবধি
পৌৌছতে পারলামনা। সেদিন ছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারী। অল্প িয়েী ছেলেমেতয়র দল সেখানে জুগলে সেল্ফি তু লতে ি্যস্। কোোলকাতাই হোোক
আর পুরুলিয়া- যুগের ধারা েিটেরেই চলে। সূযটে্য ঢলতে শুরু করেছে পশ্চিমে। পড়তে বিকেলে পাহাড় থেকে নেমে পৌৌছে গেলাম মুখোোশ
গ্াতে। কথা হল আতেজটে াঠেে খ্যাঠে সম্পন্ন ফাল্গুনী সূরেধরের সাথে। দেখলাম মুখোোশ তৈরী হওয়া। কিছু ক্ণ কাশ্টতয় গাচড় ছু টে চলল পাখী
পাহাতড়র দিকে। এক স্পতি স্ানীয় মানুষদের সাথে ঠনতয় পাহাতড়র গাতয় খচিত করেছেন ছবি আদিম মানুষের মত করে। পাহাড় জগেি
আর সেই সব ছবি। সন্ধ্যা নামলোো সেই সেখানেই। অন্ধকার আর ঝিঝি পোোকার আওয়াজের মাঝে শ্টেশ্টতে আলোো জ্বলা এেশ্ট চাতয়র
দোোকান। ফিরতি পথে রাস্ার দুধার জনমানবহীন অন্ধকার। সভ্্যতা এখনও গ্াে করেনি, শহর এখনও থাবা বসায়ঠন। কিন্তু কতদিন?
েিটেগ্ােী সভ্্যতার থেকে নিজেকে লুঠেতয় রাখবে এই আদিম পৃশ্েিী?
পরদিন সকালে েশ্টো সফর বড়ন্তি- রামচন্দ্রপুর জলােয়। অধিকাংশ লোোক এখানেই থাকে বেড়াতে এলে। সেখান থেকে দিঠরতয় রাস্তায়
পাতন্িে ড্্যাে আর গরপন্চকোোটের ধ্ংোবশেষ দেখে ঘরে ফেরার পালা। মারে দুটোো রারেী আর তিনটে দিন। স্ৃঠের গহণকোোণে জমা হতয়
গেল এক অন্য পৃশ্েিীর চিরে। সেখানে আজও রাতের বেলায় হাতির পাল নেমে আসে পাহাতড়র অন্য দিক থেকে। রাত্রে সেখানে আজও
দভ্তে আসে মাদোোলের আওয়াজ। এক প্ািীন অরণ্য এখনও ঘুঠেতয় পরে পাহাতড়র কোোলে মাথা রেখে।
পাশের পৃষ্ায় শ্াবনীর তোোলা পুরুলিয়ার কিছু ছবির তোিালাজ
UK Hindu Cultural Association
40
www.ukhca.community
ukhca.info@gmail.com
Registered UK Charity No. 1069932